সবগুলো কবিতা পড়তে হলে স্ক্রল করুন…

বুঝে নেবে

বলিনি কখনও ভালোবাসি,

তবু জানতে আমি ভালোবাসি।

নিজের অস্তিত্বের জন্য যখন

প্রতিনিয়ত ব্যস্ত আমি

তুমি অনুভবে জানতে 

ভালোবাসি তোমায়।

প্রতিটি প্রহর গুনতে ভালোবাসায়।

ভাষাহীন আমি

তবু বলছি ভালোবাসি,

ভালোবাসার সে ভাষা বুঝে নিতে তুমি।

ভালোবাসার প্রথম ছোঁয়ায়

অনুভবে তুমি ছিলে সমগ্র স্বত্তায়।

ভালোবাসি বলেছি অপলক চাহনিতে,

ভালোবাসা বুনেছি ভাষাহীন কাহিনীতে।

প্রথম অশ্রুবিন্দুও বলেছে ভালোবাসি

প্রথম হাসিতে ছিল

ভালোবাসি ভালোবাসি।

মুহুর্তের বিচ্ছেদের কান্নাগুলোতে

ভালোবাসি কথাগুলো ছিল নীরবে।

মুখ ফুঁটে আজো বলা হয়নি ভালোবাসি

তবু জানি আমার না বলা কথাগুলো

তুমি বুঝে নিবে।

(-আম্মু ও আব্বুকে।)

ধুমধাম আর বাদ্যি বাজিয়ে

ধুমধাম আর বাদ্যি বাজিয়ে

বিদায় দিলে আমায় সাজিয়ে

বিশাল আমার শশুরবাড়ী

টাকা আছে কাড়ি কাড়ি

সব ভালো তোমার জামাইবাবার

শুধু একটু নেশা মদটা খাবার

থাকে যখন মাতাল নেশায়

আমায় তখন দু চার ঘা কষায়।

নয়ত সে অনেক ভালো জামাই

করে অনেক টাকা কামাই

রাত কাটায় যখন নিয়ে

অন্য মেয়েমানুষ

আমাকে দেয় শাড়ী গহনা ঘুষ

এটাই বা কজন করে

ভালোই আছি এ সংসারে!

তোমায় বলে দু:খের কথা

দেব না মা তোমায় ব্যথা

বলেই বা কি লাভটা হবে?

বুঝিয়ে সুঝিয়ে এ ঘরেই পাঠাবে।

দু:খ গুলো বন্দী করে এই পাঁজরে

থাকি আমি সুখের মুখোশ পরে।

সমতা চাই না।

সমতা চাই না।

প্রকৃতি দিয়েছে শ্রেষ্ঠতা আমায়,

আমার হতে মানুষ জন্মায়।

অধিকার চাই না তোমার কাছে।

তুমি তো আমার মনিব নও!

এইটুকুই চাই
শুধু পুরুষ হয়ে থেকো না
মানুষ হও।

তোমার একটা সকাল হতে চাই।

তোমার একটা সকাল হতে চাই।

যে সকালটায় রোদটা ছোয় তোমায় ওম ওম উষ্ণতায়।

কিংবা ভোরের শিশির সিক্ত করে ঘাসকে ভালোবাসায়।

সেই সকালটা হবে তাজা খবরের কাগজের চেয়েও বেশি তরতাজা।

আরো থাকবে কড়া লিকারের চায়ের মজা।

তোমার একটা দুপুর হতে চাই।

আলসেমি মাখানো দিবানিদ্রার এক দুপুর।

 টিনের চালে এক নাগাড়ে বৃষ্টির শব্দ টাপুর-টুপুর।

কাথা জড়ানো একটা দুপুর।

তোমার একটা বিকেল হতে চাই।

ঝালমুড়ির মতো কুড়মুড়ে একটা বিকেল।

টং দোকানের চায়ের কাপে টুং টাং শব্দে ভরা একটা বিকেল।

তোমার একটা সন্ধ্যা হতে চাই।

যে সন্ধ্যায় ফেরারী পাখিরা ঘরে ফিরে।

মাঝ দরিয়ার সাম্পান গুলোও ফিরবে তীরে।

যে সন্ধ্যায় গোধূলির রংয়ের খেলা রইবে দীর্ঘক্ষণ।

ধ্যানমগ্ন হয়ে রবে মৌন মন।

অথবা একটা রাত।

তারা ভরা একটা রাত।

আকাশে থাকবে মস্ত বড় একটা চাঁদ।

পথ হারাবার রাত।

যে রাতে ভেঙ্গে পড়ে ঠুনকো নিষেধের বাঁধ।

যদি আপত্তি না করো,

হতে চাই তোমার সারা দিনমান।

তোমাতে হোক শুরু, তোমাতেই অবসান।

কন্যা শিশুর ভ্রুন হত্যা করো?

কন্যা শিশুর ভ্রুন হত্যা করো!

তুমি কি রাখো তারে

নয় মাস জঠরে!

তবে কেন তারে বোঝা মনে হয়?

পুরুষ তোমার পাশবিকতায়

টলটলে জল হয় পূতি গন্ধময়।

আমার জঠর হতে

পুরুষেরও জন্ম হয়।

সেই পুরুষটিরও

যে তার বর্জ্য ঢেলে দেয়

নিষ্পাপ কোন ফুলের গায়।

জন্মলগ্নে যদি করে দেই তারে নি:শেষ

হয়ত কিছু ফুল বেঁচে যাবে!

কিন্তু আমি পারি না তা

কারন আমি মা….

পুরুষ কিংবা নারী নয়

আমার হতে মানুষ জন্ম নেয়।

তারপর

এক সময়

মানুষটা বড় হয়।

আমার রক্ত পিন্ডটা কেমন করে যেন

অমানুষ হয়ে যায়!

নিস্তব্ধতার গোপন আওয়াজ।

অনুকাব্য।

 

কখনও কখনও নীরবতা

খুব বেশি কানে লাগে

যেন হৃদয় বীণায় বাজে সপ্ত রাগে।

ঘড়ির কাঁটায় টিক টিক করে চলে মন খারাপের সময়।

হারিয়ে যায় জীবনের ছন্দলয়!

মেঘগুলো আকাশে গুমোট হয়ে থাকে

থাকে না কোন ঝরবার লক্ষণ।

পাশাপাশি দুটি দেহ

যোজন যোজন দুরে দুটি মন….

ভালোবাসা নয়, অভ্যাসের জীবন!

তোমায় ভাঙ্গি, তোমায় গড়ি

তোমায় ভাঙ্গি, তোমায় গড়ি,

শব্দে শব্দে তোমায় জুড়ি।

কালির আঁচড়ে বন্দী করি।

ডায়েরীর পাতায়

কবিতার খাতায়

সজতনে করি বন্দী তোমায়।

যদি কভু হায়

হারাও অজানায়

খুঁজে নিবো তোমায়

আমার কবিতায়……

আটপৌরে ভালোবাসা

তোমার আমার সম্পর্ক যেন

আটপৌরে কাপড়খানি….ঔজ্জ্বল্যহীন।

কিংবা মেঘলা আকাশ, ধূসর দিন।

মুক্ত বিহঙ্গ মেলে না পাখনা সেথায়,

ফেরারী হয় না কোন দুর অজানায়।

মন পাখি বন্দী এ কোন খাঁচায়!

দ্বার খোলা তবু পাখি উড়িবার না চায়।

মিছে দুটি ডানা তার।

বয়ে বেড়ায় তার ভার।

হিসেবের খাতা রেখেছি তুলে সেই কবে

এত হিসাব করে বলো কি হবে!

চাল ডালের হিসাবের মাঝে

ভালোবাসার হিসাব যেন বড় কানে বাজে!

যাচ্ছে এভাবে কেটে আটপৌরে জীবন।

নাই বা ভরুক তাতে ষোলআনা মন।

জীবন ছুটে চলে সময় স্রোতে।

খড়কুটো ইচ্ছেগুলো ভেসে যায় তাতে।

ভালোবাসা নিয়ে তুমি লিখেছ

ভালোবাসা নিয়ে তুমি লিখেছ

কত শত কবিতা

তবু কেন বারে বারে ধর্ষিত হয় মানবতা!

আজ তাই আমি কবিতা বলতে আসিনি।

কোন ভালোবাসার গান শোনাতেও আসিনি।

ভালোবাসা আজ বাজারে বিকোয়,

এক হাট হতে আরেক হাটে যায়।

ভালোবাসা নিয়ে চলে অহির্নিশ ছিনিমিনি।

নিষ্পাপ ফুলগুলো পদপিষ্ট হয়

মানবতা তখন মূক হয়ে রয়।

শ্বাপদের থাবা যখন কলিগুলোকে ছিন্নভিন্ন করে 

একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে

মন আবার প্রেয়সীর খোলা পিঠে ডুব মারে।

চাই না মন ভোলাতে পূর্নিমার চাঁদ কিংবা প্রেমিকার চাঁদ মুখ।

শুধু চাই প্রতিটি শিশুর জন্য পৃথিবী নিরাপদ হোক। 

অস্তাচলের দিনগুলো

    সময়ের নিয়মে সময় বয়ে যায়। আহ্নিক গতিতে দিনরাত বদলায়।

জলবায়ুর তারতম্যে কভু সোনালী রোদ্দুর,

কভু মেঘলা ধুসর

আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতির প্রভাব

যেন মনেরও উপর!

কখনও ঘনঘোর মেঘলা,

বৃষ্টি এক পশলা,

আবার এক ফালি রোদ দেয় উঁকি

দিয়ে মেঘকে ফাঁকি।

দিন শেষে সূর্যটার প্রস্থান ,

চারদিকে বেজে উঠে আঁধারের গান।

অস্তাচলে সূর্যটা ডুব দেয়,

তবু সে জানে,

পৃথিবীর অপর সীমানায়

কেউ একজন 

আছে তার আশায়।

ঝরা পাতার মতো কিছু স্বপ্ন ঝরে যায়।

ভগ্নাংশ আমাকে আবার জড়ো করি,

ঝরা পাতাগুলোকে কুড়াই।

ঝরা পাতাকে বলি,

আমি থাকব অপেক্ষায়।

আবার এসো ফিরে

যখন হবে সময়।

ছোটদের ছড়া:

লক্ষ্মী মাগো একটু শোন

চাই না দামী মোবাইল ফোন।

তোর সময় থেকে একটু সময়

আমায় মাগো দিবি?

দু হাত বাড়িয়ে আমায় তুই

কোলে তুলে নিবি?

চাই না আমি টেডি বিয়ার

ঘুমের সময় বুকে নেয়ার।

তোর বুকের ওমে জড়িয়ে

দে মা আমায় ঘুম পাড়িয়ে।

চাঁদ, তারা আর সূয্যি মামা

জানি তারা দিবে না সাড়া।

তবু তাদের ডাক দিয়ে মা

আমার কপালে টিপ টা পড়া।

তোর টিভি দেখার সময় আমি

করি যখন দুষ্টুমি 

রাগ করে মা দিসনে বকা।

তোর মনোযোগ চায় যে খোকা।

এক্স বক্স আর দামী খেলনা

সব হবে যে ফেলনা

মা যদি হয় খেলার সাথী

লুকোচুরি খেলায় মাতি।

ছন্দে ছন্দে ষড়ঋতু

এক বছরের ছয় ছেলে মেয়ে

ঘুরে বেড়ায় তাদের নিয়ে

গ্রীষ্মটার মেজাজ চরম

চারদিকে ছড়ায় গরম

বর্ষা করে কান্না কাটি

সেই পানিতে ভেজায় মাটি

শরৎটা খুব করে খেলা

সাদা মেঘের উড়ায় ভেলা।

হেমেন্ত খুব মিষ্টি হাসে

নতুন ধানে নবান্ন আসে।

শীত মেয়েটা দস্যি ভারী,

হাড় কাঁপাতে আসে বাড়ী।

বসন্তটা বেজায় শৌখিন

ফুলে ফুলে করে রঙিন।

চলো আবার একটা যুদ্ধ করি।

চলো আবার একটা যুদ্ধ করি।

ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নগুলো

            নতুন করে জুড়ি।

আবার একটা যুদ্ধ

অস্তাচলের সূর্যটা ধরে রাখার জন্য।

আবার একটা যুদ্ধ

অকালে ঝরে পরা কুড়ি গুলোর জন্য।

আমাদের নির্লিপ্ততায়

যে সাপগুলোর বিষ বাষ্পে 

             বাতাস হয়েছে ভারী!

বাংলার আলো বাতাস নির্মল করতে

এসো আবার একটা যুদ্ধ করি।

বলেছিলে ভালোবাস সমুদ্র সমান।

বলেছিলে ভালোবাস সমুদ্র সমান।

সমুদ্র হয়নি কখনও মাপা,

জানি না তার দৈর্ঘ্য , প্রস্থ, গভীরতা।

শুধু জানি আমার চোখে আজ

                    সমুদ্রের বসবাস।

নোনা জলে উঠায় ঢেউয়ের জ্বলোৎছ্বাস।

হয়নি ভেজা দুজনার শ্রাবণধারায়

আমি একাকী ভিজে যাই

                     নোনা বর্ষায়।

মাধবীলতায় আজও ফোটে ফুল

শুধু সেই ফুলে সাজে না আমার এলো চুল।

সাহারা, কালাহারী নামই শুনেছি শুধু,

যাইনি সেখানে কভু।

তবুও তুমি বিনা এ হৃদয়

লাগে যে মরুময়।

ভালোবাসা বনাম রসায়ন!

ভালোবাসা বনাম রসায়ন!

ভালোবাসা কি!

ভালোবাসা নাকি 

        শরীরের প্রতি শরীরের আকর্ষন!

মানব শরীরের এক সাধারন রসায়ন।

পার্কের বেন্চিতে বসা

ষাটোর্ধ দম্পত্তি

গভীর ভালোবাসায় 

         ধরেছিল একে অপরের হাত।

মিথ্যে করে রসায়নের প্রবাদ!

ভালোবাসার ভাবাবেগ

নাকি মস্তিষ্কের নিউরনের যোগাযোগ! 

তবু কিছু ভালোবাসা টিকে থাকে 

                যোগাযোগ বিহীন।

হাজার মাইল দুরত্বেও হয় না তা মলিন।

কেহ বলে ভালোবাসা মনের রোগ!

হাসিমুখে মানুষ করে সেই রোগ ভোগ।

রসায়ন, যুক্তিবিদ্যা সব করে ভুল,

পৃথিবীতে ফোঁটে ভালোবাসার ফুল।

সবাই বলে তুমি নাকি থাকো

সবাই বলে তুমি নাকি থাকো

                  তারার দেশে

ওই দুর আকাশে মিটমিটিয়ে

                   থাকো তুমি হেসে।

তাই তো আমি ডাক্তার নয়

ইন্জিনিয়ার নয়

হবো মহাশূন্যচারী।

আসব ঘুরে মাগো আমি

           তোমার তারার বাড়ী।

লুকাতাম যখন দুষ্টুমির ছলে

কাঁদতে মা তুমি আমায় না পেলে।

এখন তুমি কেমন করে

থাকো বলো আমায় ছেড়ে!

তারার দেশ কি বলো মাগো

              এখান থেকেও ভালো?

হাজার জোনাক জ্বলে নিভে

              দেয় কি তোমায় আলো?

বলতে আমায় মানিক রতন,

সেই রতনকে ফেলে মাগো

        থাকো কেন দুরে এখন?

ভালোবাসার দিনলিপি

একটা সকাল আলসেমিতে

লেপের তলায় খুনসুটিতে

কফির কাপ ছলকে যায়

হঠাৎ যেন তোমার ছোঁয়ায়।

আলতো করে রোদটা ছোঁয়

তোমায় আমায় ভোর বেলায়।

এমন ভাবে হোক না শুরু

তোমার আমার দিনগুলোর।

থাক না হিসেব, থাক পড়ে থাক

যত্তসব চাল চুলোর।

সকাল গড়িয়ে হোক দুপুর,

শান্ত শীতল প্রেমের পুকুর।

আঁজলা ভরে সেঁচব জল,

খুঁজব দুজন প্রেমের তল।

নাই বা পেলাম তল খুঁজে তার,

ডুবলে বলো কি ক্ষতি আর!

বারান্দাটায় বিকেল বেলায়

উত্তরী বায় চুলটা উড়ায়,

আলতো ছোঁয়ায় চুল সরিয়ে

দিও কপালে চুমুর টিপ পরিয়ে।

তোমার আমার ভালোবাসায়

সূর্য লাজে মুখ লুকায়!

রাতটা দিয়ে তোমায় আমায় 

দিগন্তে সে নেয় বিদায়।

লাইটপোষ্টের নিচে দাড়ানো

লাইটপোষ্টের নিচে দাড়ানো

চেহারাতে কড়া মেকাপ চড়ানো

মেয়েটি

আমি তোমার কাছে ঋনী।

তুমি আছো বলেই

আমি শুধু দূর হতেই

শেয়াল গুলোর হুক্কা হুয়া শুনি।

তুমি হয়েছ সহজ খানা

নয়ত পড়ত খোয়ারে হানা।

খারাপ মেয়ে তোমায় লোকে বলে

তবু কি এই সমাজ তোমাকে ছাড়া চলে!

মন্দ মেয়ে রাতের আসর জমায়

ভালো মেয়েরা নিরাপদে খোয়ারে ঘুমায়।

চাঁদ নিয়ে লিখছে কবি

চাঁদ নিয়ে লিখছে কবি

কেউবা চাঁদের তুলছে ছবি

আমি একা চন্দ্রাহত

দৃষ্টি করে রাখি অবনত।

এক সময় ছিল

যখন চাঁদনী পসর রাতে

রন্দ্রে রন্দ্রে জোৎস্না মেখে

ভাসতাম, ডুবতাম ভালোবাসার সুখে।

এখনও বেহায়া চাঁদটা

তেমনি ভাবে চেয়ে থাকে।

শুধু তুমি সাড়া দাও

অন্য কারো বাহুর ডাকে।

কখনও যেন সময়

কখনও যেন সময়

বহে ধীর লয়।

মুহূর্ত গুলো পাথরসম হয়।

বিষন্নতার মেঘে আচ্ছন্ন

মনের আকাশ।

তপ্ত বাতাস।

হৃদয়ে চলে সুপ্ত জলোচ্ছাস।

হয়ত দু ফোঁটা বারিপাত।

দীর্ঘ মনে হয় রাত!

ঘড়ির কাটায় হয় না

সময়ের ধারাপাত।

অনুকাব্য ।

১০/১১/১৭।

সাদা তো সাদাই

সাদা তো সাদাই,

কালো তো কালোই হয়।

তবে কিভাবে বলি

সর্বত্র সুন্দরময়!

অসুরের পদাঘাতে

ধরনী এখনও প্রকম্পিত হয়।

দিন আছে, আছে রাত।

আছে মন্দের করাল থাবা,

আছে স্নেহে বাড়ানো হাত।

রাত পোহালে জগত আলোময়

তাই বলে কি রাতটা মিথ্যে হয়!

রাতের আঁধারে যদি পাও ভয়।

নাহ, কোন উপহাস নয়।

বন্ধু হয়ে থাকব সাথে

বলব রেখে হাত তোমার হাতে

অসুরের দাপটে যতই হোক না কালো রাত

একসাথে হানব প্রতিঘাত।

আর কত?

আর কত লাল হলে ঘাসের গালিচা

আসবে তুমি স্বাধীনতা!

কত মাবোনের সম্ভ্রম চাই তোমার

জায়নামাজ, ভোরের শঙ্খনাদ,

ভিক্ষুর গেরুয়া বেশ,

সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি অঢেল অশেষ

কি কি চাই আর!

আজও আমার আকাশে

মুক্ত পাখি উড়ে না পাখা মেলে

সেখানে এখনও শকুনের 

ধুসরকালো ছায়া খেলে।

সময় বয়ে চলে কান্ডারীহীন

পান্জেরীর দেখা নেই

জানিনা কালো রাত পেরিয়ে কখন আসবে দিন!

এখন অমানুষগুলো কোন খাকি উর্দিতে নয়,

দেখতে একদম মানুষের মত মনে হয়!

আমাদের নির্লিপ্ততায়

হানাদারের ছায়াগুলো জ্যামিতিক হারে যায় বেড়ে।

স্বাধীনতা মুখ লুকায়….

আর আমার স্বপ্নরা যায় বারবার হেরে।

আবার চাই একটা উত্তাল মার্চ,

একটা বজ্রনিনাদ কন্ঠের ডাক।

হিন্দুমুসলমান, ধনীগরীব নয়

হবে শুধু একটাই বিভাজন

স্বাধীনতার শত্রু

আর স্বাধীনতার সূর্যসন্তান।

ঈদ নিয়ে রম্য

সরু পেটে গরু আঁটে

মোটা হলে পেট ফাটে।

মজা হবে খাসি

হবে যখন বাসী।

ভুনা, কাবাব, রেজালা।

চলবে খাওয়ার পালা

পোলাও, পরোটা, রুটিতে

মাংস খাবো ছুটিতে।

কোলস্টোরেলটা বেশি হাই

ডাক্তারের বারন তাই।

কুরবানীর গোশতে রহমত আছে

কে বলো এত বাছে!

গপ গপ খেয়ে নেই,

ঔষুধ না হয় ডোজ বাড়িয়ে দেই।

গোশত হলে শেষ, খাবো ভূড়ি

খাওয়াতে আমাদের নাই জুড়ি!

নলা দিয়ে নেহারী।

খেতে পরে যায় কাড়াকাড়ি।

এত খাওয়া দাওয়ার মাঝে

রান্না বাড়ার শতেক কাজে

কুরবানীর উদ্দেশ্য যেন না ভুলি,

ত্যাগের মহত্ত্বে জীবন চলি।

মাঝে মাঝে এ মন

মাঝে মাঝে এ মন

হতে চায় এক টুকরো মেঘ

উড়ে যেতাম ভেসে ভেসে

সীমানা পেরিয়ে এক দেশ হতে আরেক দেশে।

কখনও বা অভিমানী হয়ে

কালো মেঘে ঝড় আসতো ধেয়ে।

মেঘ হওয়া হলো না আমার!

তবু গোপন এক বৃষ্টিতে

ভিজে যাই বার বার….

নদীর মত হতাম যদি

যেতাম ছুটে নিরবধি

পেরিয়ে ভূমি উঁচু নিচু

না তাকিয়ে আমি পিছু।

ভাসিয়ে নিয়ে একুল ওকুল

আমার স্রোতের তোড়ে….

নদী হওয়া হলো না আমার!

তবু এ কোন স্রোতের টানে

হৃদয় আমার ভাঙ্গেগড়ে!

যদি হতাম আকাশ আমি

দিগন্তজোড়া একরাশ নীল।

বিশ্ব ব্রক্ষান্ড হতো সীমানা।

আমার আকাশ হওয়া হলো না,

চার দেয়ালেই রইল ঠিকানা।

তবু কেন আকাশের অন্তহীন শূন্যতা

বুকের মাঝে জমাট নীরবতা!

হেলেন কেলার নাকি ছিলেন

হেলেন কেলার নাকি ছিলেন

মুক, বধির, অন্ধ!

তবু তিনি যতটুকু দেখতেন, শুনতেন

ততটুকু কি আমরা পাই!

আমাদের যে চোখ কান সব বন্ধ!

যখন ছোট শিশুটিও হয় ধর্ষন

হয় না কেন পৃথিবীতে অগ্নিবর্ষণ!

পুড়ে কেন হয়না ছারখার সব!

ক্ষণিকেই কেন মিইয়ে যায় প্রতিবাদের রব!

ফানুসের মত উড়ে যায় সব ক্রোধ,

সেই সাথে উড়ে যায় মানবতাবোধ

কারো জীবনের ঘড়ি থেমে যায়।

তবুও সময় তার নিয়মেই বয়ে যায়।

পূজা , তনুদের ভুলে দেই সিরিয়ালে মনোযোগ।

চায়ের কাপে বিতর্কের ঝড়ে উড়ে যায় সব

শোক।

কানে দেই তুলো, চোখে পড়ি ঠুলি।

নয়ত কি করে বলো দু মুঠো ভাত গিলি!

ভুলে যেতে পারি বলেই কি জীবন বয়ে চলে!

এভাবে বেঁচে থাকাকে কি বেঁচে থাকা বলে?

সবাই বলে শৈশব নাকি

সবাই বলে শৈশব নাকি

জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়!

সবার জীবনে কি তা সত্য হয়?

শৈশবের হাওয়াই মিঠাইটাও

বড্ড তিতকুটে মনে হয়।

নোংরা জলে, নোংরা স্পর্শে

শৈশব পূতিগন্ধময়।

ঠাকুর মার ঝুঁলিতে পোরা

রাক্ষস, দৈত্যদানো,

আসল রাক্ষসের সাথে

মিল নেই কোনো!

নানা রূপে, নানা বেশে

তারা ঘুরে ফিরে।

নিষ্পাপ শৈশব গুলো

পলকে নেয় কেড়ে।

স্বপ্নের সাথে দেয় দু:স্বপ্ন জুড়ে।

আত্মবিশ্বাসের ভীতটা করে নড়বড়ে।

পৃথিবীর সকল শিশুর

শৈশব হোক নির্মল।

ছিড়ে ফেলি রাক্ষসগুলোর

মুখোশের ছল।

ছিন্ন কুড়ি।

(ছোটদের জন্য ছড়া: )

নতুন জামা।

এবার ঈদে নতুন জামা

নিবো না আমি মা।

সেবার ঈদে সেই জামাটা

একবারই পরেছি সেটা

সুপারম্যান আঁকা নীল জামা

দিয়েছিল বড় মামা,

একবারও তো হয়নি পরা।

আলমারীতে জামায় ভরা।

যে ছেলেটা রাস্তার ধারে

লোকের জুতা পালিশ করে।

তার জামাটা বেজায় ছেড়া

শতেক তালিতে দিয়েছে জোড়া।

এবারের ঈদের দিনে

দাওনা তাকে নতুন জামা কিনে।

আমার তো অনেক আছে,

ভালো জামা নেই ওর কাছে।

(ছোটদের ছড়া) 

শীত বুড়ী

শীত বুড়ীটা বছর ঘুরে

আসলো আবার ধরায় ফিরে।

কুয়াশার চাদর গায়ে

শীত বুড়ীটা আসলো ধেয়ে।

গাছের পাতা নড়ে চড়ে

টুপটাপ পড়ল ঝরে।

পৌষ পার্বণে পিঠা পুলি,

ক্ষেতের আলে মটর শাক তুলি।

খেঁজুর গাছ সারি সারি

গাছে বাঁধা রসের হাড়ি।

তিল, তিসি আর সর্ষে ক্ষেতে

রংয়ের খেলা উঠল মেতে।

শিশির ভেজা ঘাসের আগায়

ভোরের আলো নাচন জাগায়।

জড়ো করা শুকনো পাতায়

গ্রামের ছেলেরা আগুন জ্বালায়।

আগুন তাপে শীতটা কমে,

গল্পের আসর জমে।

ভালোবাসি শীত বুড়ীটাকে

গরম জামা যখন গায়ে থাকে।

বছর ঘুরে বারে বারে

আসিস বুড়ী তোর ঝুলি পুরে।

আমি এক পথিক

আমি এক পথিক

হেঁটে চলছি পথটায়,

জানি না গন্তব্য কোথায়!

কখনও পিচ ঢালা মসৃন পথ,

কখনও উঁচু নিচু অসমতল,

তবু চালিয়ে যেতে হয় জীবনের রথ।

ক্লান্ত হই

থমকে দাড়াই

নিজেকে আবার গুছিয়ে নিয়ে

          সম্মূখে পা বাড়াই।

কত কত শাখা প্রশাখা পথটায়

কোনটা পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর,

কোনটা আবার দক্ষিনে যায়।

শুনেছি পথও নাকি ভুল হয়

একবার যদি যাও ভুল পথটায়

নষ্ট হবে জীবনের খানিকটা সময়।

কেউ কেউ হারিয়ে যায়

পথের গোলক ধাঁধায়।

আমি হেঁটে চলেছি পথে

কিছু স্বপ্ন নিয়ে সাথে।

পথে হেঁটে যায় কত শত মুসাফির,

কেউ খানিকটা পথ সাথে যায়,

কেউ সঙ্গী হয় বহুদূর।

এই পথ চলা বিরামহীন

এ ছুটে চলা শেষ হবে

              জীবনের শেষ দিন।

প্রাক্তন।

কৃষ্ণচূড়ার ডালে এখনও নিয়ম করে

ফোটে আগুন রঙা ফুল।

চাঁপা ফুলগুলোও আগের মতই

মাতাল করা সৌরভ ছড়ায়।

চেনা শহরের রাস্তা গুলোয় বারবার পিচের প্রলেপ পড়লেও একেবারে অচেনা হয়ে যায়নি।

এখনও হৃদয়ে হৃদয়ে হয় যোগাযোগ।

আগেরই মত আছে যেন সব!

আগের মতো নেই আমি আর তুমি

স্মৃতির যে সিন্ধুকের চাবি হারিয়ে ফেলেছি আমি

সেই সিন্ধুকে বন্দী আছো যে তুমি।

সময়ের ধুলোতে স্মৃতিটাও মলিন।

আবার যদি পথ ভুলে দুজন হই মুখামুখি   চেনা পথটায়

তুমি কি চিনবে আমায়!

আবার কি হারানো সেই নাম ধরে

ডাকবে হঠাৎ অসাবধানতায়!

আঁধার নামে যখন ওই আকাশটায়

আঁধার নামে যখন ওই আকাশটায়

সূর্যটা ঘুমের চাদরে মুখ লুকায়

তারা গুলো জেগে উঠে

মিট মিটিয়ে আলসেমি চোখে চায়।

এমন রাতটায়

         নিশাচরের জেগে উঠার সময়।

আমিও টের পাই

আমার ঘুম পারিয়ে রাখা শরীর জেগে যায়।

মাতাল উম্মাদনায়

শরীর ডুবে যেতে চায়।

শরীরের বাঁকে বাঁকে উঠে টান

এ কোন জোয়ার ভাটায়!

শরীর তুই হোস না কেন বশ!

সমাজের নিয়মে কেন নামাস তুই ধস!

মানুষ মরে তবু মরে না কেন মন!

বিধবার আমিষের কিবা প্রয়োজন!

থাক না কিছু গল্প তোলা

থাক না কিছু গল্প তোলা

সব কথা যে যায় না বলা!

স্বপ্ন কিছু থাকুক জমা,

দেখব না আর খোয়াব নামা।

সবটা যদি যায় গো বোঝা 

জীবন হলে সরল সোজা

বহুরূপে ভালোবাসা

মহাবিশ্বের আদি অন্তহীন শূন্যতায়

দুজন মানব মানবী

ভরেছিল পৃথিবী ভালোবাসার পূর্নতায়।

সেই থেকে ভালোবাসার যাত্রা নিরন্তর।

প্রস্তর যুগেও ভালোবাসা হয়নি পাথর,

তখনও ভালোবাসার উত্তাপে গলেছে হৃদয়।

সময়ের কাল স্রোতেও হয়নি ভালোবাসার ক্ষয়।

বহুরূপে ভালোবাসা 

হৃদয়ে বাঁধে বাসা।

কখনও সরব কখনও বা নীরব।

ভালোবাসায় প্রাণ মন সপে দেয় সব।

যুগে যুগে ভালোবাসার ডোরে

মানব মানবী বাঁধা পড়ে।

জীবনের অনেক পথ পাড়ি দিয়ে

জীবনের অনেক পথ পাড়ি দিয়ে

এখন মনে হয়

প্রিয় ওই পথটাতে কতদিন হাঁটি নাই

যে পথটায় কৃষ্নচূড়া আগুন রঙা রুপটা ছড়ায়

বাউরী বাতাস দোল দিয়ে যায় বটগাছটার শাখায় শাখায়

মদনটাক মৌন হয়ে বসে থাকে গাছের আগায়

পথের ধারে ঘাসের পরে

বকুল ফুল পরে ঝরে

কুড়িয়ে নিতাম ঝরাফুল

আমার আচঁল ভরে

আজ হাজার পথের ভীড়ে

সে পথ আমার গিয়েছে হারিয়ে

ভালোবাসায় মগ্ন আমি

হেঁটেছি তোমার হাতটা ধরে

তোমারই পথের পরে

কত কিছু উপেক্ষা করে

ভালোবাসাকেই করেছি আমি আমার পথের ঠিকানা

তবু কেন মনে হয়

ভালোবাসার মতো ভালোবাসাটাই হলো না।

বলতে অনেক বাসো ভালো

বলতে অনেক বাসো ভালো

আমার এই চুল দীঘল কালো

এখন সে চুল পরলে ভাতে

যাও কেন তুমি এত তেঁতে?

আমার এ চোখ কাজল মাখা

করতো তোমায় পাগল পারা

এখন যখন সাজতে বসি

তুমি যে দাও ভীষন তাড়া।

আমার এই অভিমানী মুখ

করতো তোমায় বেজায় ভাবুক

এখন যদি মুখ করি ভার

চালাও তুমি কথার চাবুক।

বসতে আমার গা টি ঘেসে

নানা রকম ছল ছুতাতে

এখন নাকি গন্ধ আসে

পেয়াজ রসুনের আমার গা তে।

খালি পেটে যদি মনটা ভরে

বসব না আর চুলার ধারে

হয়ে যাব আগের আমি

যাকে ভালো বাসতে তুমি

থাকবে না আর রান্না বাজার

তোমার আর আমার মাঝার।

সখী সুখ নিবে?

সখী সুখ নিবে?

সুখের ঝাপি দিয়েছি খুলে।

হরেক রংয়ের সুখ আছে ভাই

মন যা চায়

নাও গো তুলে।

শুধু দু:খ গুলো আমার করে

কাচের বৈয়ামে 

রেখেছি ভরে।

অবসরে সময় করে

দেখব তারে নেড়েচেড়ে।

সুখের স্বরুপ

সুখ তোমায় খুঁজেছি আমি

রেশমী চুড়ির রিনিঝিনির মাঝে।

কখনও খুঁজেছি আলমারীতে

তুলে রাখা জামদানী গুলোর ভাঁজে।

সুখ তুমি কি উড়ে বেড়াও

গঙ্গা ফরিংয়ের ডানায়?

ঠিকানা কি তোমার আকাশের

ওই দুর সীমানায়?

খুঁজেছি সুখের ছোয়া রংধনুটার রংয়ে।

সুখ তুমি কি বন্দী হয়েছ

কোন এক অকেজো তালার জংয়ে?

খুঁজে ফিরে পেলাম তারে

আমার এই ছোট্ট সংসারে।

সুখ এখানে বাস করে

অবুঝ শিশুর রুপটি ধরে।

সুখ তোমায় পাই ফিরে

রসনায় তৃপ্ত স্বামীর ঢেঁকুরে।

 

সুখের স্বরুপ

২৫//২০১৭

পৃথিবী ঘুমায়

পৃথিবী ঘুমায়

আমি জেগে আছি,দেখব বলে

কি করে ভোর হয়!

কালোর চাদর সরিয়ে কেমন করে হয়

আলোর দিকবিজয়!

পৃথিবী ঘুমায়,

আমি জাগি

আর শুকতারা জেগে রয়।

আঁধারের বুকে স্বপ্ন জাগায়….

নিকষ কালো রাতে দেয় অভয়।

শুকতারা বলে

বন্ধু আছি পাশে

দিগন্তে যতক্ষন না সূর্যটা হাসে।

বন্ধু হয়ে আছি জেনো

তোমার ওই একলা আকাশে।

পৃথিবী ঘুমায়

নতুন দিন আসবে এই বিশ্বাসে,

আলোর রেখা ফুটবে পুব আকাশে।

আর আমি জেগে থাকি,

আমি দেখতে চাই

আলো কিভাবে করে

আঁধার জয়!

কিভাবে নতুন দিনের সূচনা হয়!

ঘুমাও পৃথিবী,

তুমি ঘুমাও নির্ভয়।

তোমার মঙ্গল কামনায়

কেউ না কেউ জেগে রয়।

সত্য সুন্দরকে করতে মৃত্যুন্জয়

খুঁজে ফিরে উপায়।

মন খারাপের বেলা

মন খারাপের বেলা

আকাশ জুড়ে মেঘের ভেলা।

ধুসর মেঘ, কালো মেঘ,

বুকের মধ্যে জমাট আবেগ।

কখনও কখনও বৃষ্টি নামে

তবু কি এই কষ্ট কমে!

মেঘলা আকাশ, মেঘলা মন

দু:খ বিলাসে কাটে ক্ষণ।

আবার একটা শব্দের মিছিল চাই

আবার একটা শব্দের মিছিল চাই

উত্তাল মার্চের বজ্রনিনাদ শব্দ

যেই শব্দরা দখল নিবে

অলিগলি সব।

যে শব্দে হবে কালবৈশাখীর তান্ডব।

আজকাল শব্দগুলো বড্ড প্রেমিক!

প্রেয়সীর শাড়ীর ভাজে ভাজে

নাক ডুবিয়ে রাখার ঝোঁক।

অধরে অধরে জোড়বন্দী খেলায়

শব্দগুলো কন্ঠনালীতেই মিলায়।

শব্দরা এখন বাজারে বিকোয়,

সস্তা শব্দের কাটতি বেজায়!

শব্দের আজ বেসাতি চলে,

শব্দ হারায় মুখোশের তলে।

পাছে স্বপ্ন ভেঙে যায়

পাছে স্বপ্ন ভেঙে যায়

তাই পাহারা বসিয়েছি স্বপ্নের পথটায়।

মনের কানা গলিতে পড়ে না

সূর্যের কিরণ।

কিছু কথা, কিছু নাম আঁধারে হারায়,

ভুলেও তারে করি না স্মরণ।

জীবনের চোরাবালিতে ডুবেছি তো সেই কবে!

উড়বার স্বপ্ন দেখে বলো কি হবে!

ডানা ভাঙ্গা পাখিটা থাকুক না নীড়ে

জীবনটা কেটে যায় জীবনের ভীড়ে

ভালোবাসার একুলওকুল

বাসতি কি ভালো বৃষ্টির পানি

যদি হতি আসমানী!

ভেন্না পাতার ঘরটি হলে

মন ভিজে না বৃষ্টির জলে।

উত্তাল ওই সমুদ্রের ঢেউ

করতো কি তোকে পাগল পারা!

হতি যদি সেই জেলে বউ

যে হয়েছে স্বামী হারা

রাত নিয়ে তোর কাব্যগাথা।

জানিস কি তুই তাদের কথা?

নখের আঁচড়ে যাদের গতরে

রাত্রি নামে হয়ে ব্যথা।

প্রমত্তা ওই নদীটারে

বাসতি কি ভালো এমন করে!

যদি যেত তোর ঘরটি ভেসে

ওই নদীটার করাল গ্রাসে!

তবু তুই যাস না থেমে,

ভালোবাসা যেন যায় না কমে।

মন প্রান উজার করে তুই ভালোবাস।

অসুন্দরের মাঝেও করে সুন্দর বাস।

মুক্তো

যে মুক্তো দেখে তুমি হও উদ্বেলিত!

সে মুক্তো ঝিনুকের বুকের ক্ষত।

পরতে পরতে চলে ক্ষত ঢাকার প্রয়াস।

মুক্তোর আবরনে হৃদয়ে ক্ষতের বাস।

আমার একটা সিন্ধুক আছে

সেই সিন্ধুকে আমি কষ্ট, কান্না, হতাশা

সব রাখি বন্ধক।

মস্ত বড় এক তালা,

তালা বদ্ধ সিন্ধুক।

মাঝে মাঝে মনে হয় 

চাবিটা ছুড়ে ফেলি কোন অতলান্ত সাগরে।

বন্দী কষ্টগুলো হারিয়ে যাক চিরতরে।

রূপকথা

ঠাকুর মার ঝুলি খুলি

আয় খোকা তোকে গল্প বলি

এক যে ছিল ডালিম কুমার

শুনবি কেন এ নাম হলো তার!

পঙ্খীরাজের উড়িয়ে ডানা

উড়ে যেতে নেইকো মানা।

তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে

হীরক রাজার দেশ ছাড়িয়ে

রাক্ষস খোক্কস থাকে যেথা

রাজকন্যা বন্দী সেথা।

রাক্ষসখোক্কস সব মেরে

আনব রাজকন্যাকে মুক্ত করে।

সুয়োরানী দুয়োরানী

শুনবি খোকা সেই কাহিনী!

লালকমল আর নীলকমল

রাক্ষসের সাথে করেছে কি ছল!

ঝিনুক মাঝে পদ্মপুকুরে

প্রাণভোমর থাকে কেমন করে!

যেমন করে আমার প্রাণভোমর

থাকে খোকা তোর ভিতর।

আয় খোকা আয় আজকে তোকে

নিয়ে যাই কল্পলোকে।

আমি এক পথিক

আমি এক পথিক

হেঁটে চলছি পথটায়,

জানি না গন্তব্য কোথায়!

কখনও পিচ ঢালা মসৃন পথ,

কখনও উঁচু নিচু অসমতল,

তবু চালিয়ে যেতে হয় জীবনের রথ।

ক্লান্ত হই

থমকে দাড়াই

নিজেকে আবার গুছিয়ে নিয়ে

          সম্মূখে পা বাড়াই।

কত কত শাখা প্রশাখা পথটায়

কোনটা পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর,

কোনটা আবার দক্ষিনে যায়।

শুনেছি পথও নাকি ভুল হয়

একবার যদি যাও ভুল পথটায়

নষ্ট হবে জীবনের খানিকটা সময়।

কেউ কেউ হারিয়ে যায়

পথের গোলক ধাঁধায়।

আমি হেঁটে চলেছি পথে

কিছু স্বপ্ন নিয়ে সাথে।

পথে হেঁটে যায় কত শত মুসাফির,

কেউ খানিকটা পথ সাথে যায়,

কেউ সঙ্গী হয় বহুদূর।

এই পথ চলা বিরামহীন

এ ছুটে চলা শেষ হবে

              জীবনের শেষ দিন।

একটি অসমাপ্ত কাব্য

ভালোবাসা কি থাকে নীল পদ্মে!

নাকি ভালোবাসা থাকে শুধু

         মুঠোতে ধরা দুজনার হাতের মধ্যে!

ভালোবাসা তুমি কি থাকো বেলীর মালায়

  জড়ালে তা প্রেয়সীর এলো খোঁপায়!

ভালোবাসা থাকে কভু 

                    চালডালের হিসাবে।

সংসারের প্রয়োজনের জাবেদা খতিয়ানে।

ভালোবাসা থাকে

ভালোবাসার মানুষটির অসুখে রাত জাগায়।

ভালোবাসা থাকে

ছোট ছোট ভালো লাগায়।

ভালোবাসা থাকে

না বলা কথাগুলো বুঁঝে নেয়ায়।

ভালোবাসা থাকে

না ছুঁয়েও মন ছুঁয়ে যাওয়ায়।

৩০ ডিসেম্বর ২০১৭

ভোর হলো

ভোর হলো 

         দোর খোল

খোকাখুকি উঠরে

মস্ত বড় ব্যাগ নিয়ে স্কুলেতে ছোটরে।

বাসা হতে সব পড়া

লাগবে শেষ করা

টিচারের কাছে শুধু পড়াগুলো বলরে।

পড়া যদি না বুঝো

টিউটর খোঁজরে।

আগে থেকে বিদ্যাসাগর হয়ে

স্কুলেতে চলরে।

বোঝ আর না বোঝ

পড়াগুলো গিলরে।

কোচিংয়ের যাতাকলে

শৈশব হারিয়ে গেলরে।

না বলেও বলেছি ভালোবাসি

কখনও বলা হয়নি ভালোবাসি তোমায়,

তুমিও বলনি কখনই।

ভালোবাসা লেখা থাকে ঘড়ির কাটায়

যখন থাকি তোমার ফেরার অপেক্ষায়,

প্রতিটি সেকেন্ড বলে

                 ভালোবাসি তোমায়।

তোমার বুক পকেটে রাখা রুমালের ভাঁজটায় 

ভালোবাসা গোপনে বলে

চিরদিন রেখো আমায় হৃদয়ের কাছটায়।

এটা কই , ওটা কই

বলে যখন ডাক

ভালোবাসা নীরবে কহে

তোমায় সঁপেছি যা ছিল মোর

তুমি নিজের করে রাখো

ভালোবাসা থাকে কভু নীরব ভাষায়,

ভালোবাসা থাকে শুধু ভালোবাসায়।

না বলেও বলেছি ভালোবাসি

হিসাবে বরাবরই কাঁচা আমি

হিসাবে বরাবরই কাঁচা আমি

অংক কষতে উঠে নাভি:শ্বাস।

কোন মতে টেনে টুনে করেছি অংকে পাশ।

হিসাবে কাঁচা ছিলাম বলেই ভেবেছি

পনের হাজার টাকার বেতনে

সংসারটা পারব নিতে টেনে!

ভেবেছিলাম যদি কোথাও কিছু পড়ে কম

ভালোবাসা দিয়ে হিসাবের সমীকরন হবে সম!

তোমার দাড়িপাল্লায়

আমার ভালোবাসার তেমন

ছিল না কোন ওজন।

তাই হিসাবটা হোল না আর সমান।

থোড় বড়ি খাড়া করেছি আর খাড়া বড়ি থোড়।

তবুও জীবন অংক হয়ে গেল বেজোড়।

তোমার ওই আনমনা মনের কোনায়

তোমার ওই আনমনা মনের কোনায়

আমায় দেবে কি একটু ঠাঁই

আমার ষোলআনা মনটা দিয়ে

বাসা বাঁধতে চাই।

আমার মন চড়ুই

তোমার মনের ঘুলঘুলিতে দাও না তারে ঠাঁই।

ভালোবাসার কিচির মিচির

করব আমি সকাল দুপুর