ধুমধাম আর বাদ্যি বাজিয়ে
ধুমধাম আর বাদ্যি বাজিয়ে
বিদায় দিলে আমায় সাজিয়ে
বিশাল আমার শশুরবাড়ী
টাকা আছে কাড়ি কাড়ি
সব ভালো তোমার জামাইবাবার
শুধু একটু নেশা মদটা খাবার
থাকে যখন মাতাল নেশায়
আমায় তখন দু চার ঘা কষায়।
নয়ত সে অনেক ভালো জামাই
করে অনেক টাকা কামাই
রাত কাটায় যখন নিয়ে
অন্য মেয়েমানুষ
আমাকে দেয় শাড়ী গহনা ঘুষ
এটাই বা কজন করে
ভালোই আছি এ সংসারে!
তোমায় বলে দু:খের কথা
দেব না মা তোমায় ব্যথা
বলেই বা কি লাভটা হবে?
বুঝিয়ে সুঝিয়ে এ ঘরেই পাঠাবে।
দু:খ গুলো বন্দী করে এই পাঁজরে
থাকি আমি সুখের মুখোশ পরে।
সমতা চাই না।
সমতা চাই না।
প্রকৃতি দিয়েছে শ্রেষ্ঠতা আমায়,
আমার হতে মানুষ জন্মায়।
অধিকার চাই না তোমার কাছে।
তুমি তো আমার মনিব নও!
এইটুকুই চাই
শুধু পুরুষ হয়ে থেকো না
মানুষ হও।
তোমার একটা সকাল হতে চাই।
তোমার একটা সকাল হতে চাই।
যে সকালটায় রোদটা ছোয় তোমায় ওম ওম উষ্ণতায়।
কিংবা ভোরের শিশির সিক্ত করে ঘাসকে ভালোবাসায়।
সেই সকালটা হবে তাজা খবরের কাগজের চেয়েও বেশি তরতাজা।
আরো থাকবে কড়া লিকারের চায়ের মজা।
তোমার একটা দুপুর হতে চাই।
আলসেমি মাখানো দিবানিদ্রার এক দুপুর।
টিনের চালে এক নাগাড়ে বৃষ্টির শব্দ টাপুর-টুপুর।
কাথা জড়ানো একটা দুপুর।
তোমার একটা বিকেল হতে চাই।
ঝালমুড়ির মতো কুড়মুড়ে একটা বিকেল।
টং দোকানের চায়ের কাপে টুং টাং শব্দে ভরা একটা বিকেল।
তোমার একটা সন্ধ্যা হতে চাই।
যে সন্ধ্যায় ফেরারী পাখিরা ঘরে ফিরে।
মাঝ দরিয়ার সাম্পান গুলোও ফিরবে তীরে।
যে সন্ধ্যায় গোধূলির রংয়ের খেলা রইবে দীর্ঘক্ষণ।
ধ্যানমগ্ন হয়ে রবে মৌন মন।
অথবা একটা রাত।
তারা ভরা একটা রাত।
আকাশে থাকবে মস্ত বড় একটা চাঁদ।
পথ হারাবার রাত।
যে রাতে ভেঙ্গে পড়ে ঠুনকো নিষেধের বাঁধ।
যদি আপত্তি না করো,
হতে চাই তোমার সারা দিনমান।
তোমাতে হোক শুরু, তোমাতেই অবসান।
কন্যা শিশুর ভ্রুন হত্যা করো?
কন্যা শিশুর ভ্রুন হত্যা করো!
তুমি কি রাখো তারে
নয় মাস জঠরে!
তবে কেন তারে বোঝা মনে হয়?
পুরুষ তোমার পাশবিকতায়
টলটলে জল হয় পূতি গন্ধময়।
আমার জঠর হতে
পুরুষেরও জন্ম হয়।
সেই পুরুষটিরও
যে তার বর্জ্য ঢেলে দেয়
নিষ্পাপ কোন ফুলের গায়।
জন্মলগ্নে যদি করে দেই তারে নি:শেষ
হয়ত কিছু ফুল বেঁচে যাবে!
কিন্তু আমি পারি না তা
কারন আমি মা….
পুরুষ কিংবা নারী নয়
আমার হতে মানুষ জন্ম নেয়।
তারপর–
এক সময়
মানুষটা বড় হয়।
আমার রক্ত পিন্ডটা কেমন করে যেন
অমানুষ হয়ে যায়!
নিস্তব্ধতার গোপন আওয়াজ।
অনুকাব্য।
কখনও কখনও নীরবতা
খুব বেশি কানে লাগে
যেন হৃদয় বীণায় বাজে সপ্ত রাগে।
ঘড়ির কাঁটায় টিক টিক করে চলে মন খারাপের সময়।
হারিয়ে যায় জীবনের ছন্দ–লয়!
মেঘগুলো আকাশে গুমোট হয়ে থাকে
থাকে না কোন ঝরবার লক্ষণ।
পাশাপাশি দুটি দেহ
যোজন যোজন দুরে দুটি মন….
ভালোবাসা নয়, অভ্যাসের জীবন!
“আটপৌরে ভালোবাসা“
তোমার আমার সম্পর্ক যেন
আটপৌরে কাপড়খানি….ঔজ্জ্বল্যহীন।
কিংবা মেঘলা আকাশ, ধূসর দিন।
মুক্ত বিহঙ্গ মেলে না পাখনা সেথায়,
ফেরারী হয় না কোন দুর অজানায়।
মন পাখি বন্দী এ কোন খাঁচায়!
দ্বার খোলা তবু পাখি উড়িবার না চায়।
মিছে দুটি ডানা তার।
বয়ে বেড়ায় তার ভার।
হিসেবের খাতা রেখেছি তুলে সেই কবে
এত হিসাব করে বলো কি হবে!
চাল ডালের হিসাবের মাঝে
ভালোবাসার হিসাব যেন বড় কানে বাজে!
যাচ্ছে এভাবে কেটে আটপৌরে জীবন।
নাই বা ভরুক তাতে ষোলআনা মন।
জীবন ছুটে চলে সময় স্রোতে।
খড়কুটো ইচ্ছেগুলো ভেসে যায় তাতে।
ভালোবাসা নিয়ে তুমি লিখেছ
ভালোবাসা নিয়ে তুমি লিখেছ
কত শত কবিতা
তবু কেন বারে বারে ধর্ষিত হয় মানবতা!
আজ তাই আমি কবিতা বলতে আসিনি।
কোন ভালোবাসার গান শোনাতেও আসিনি।
ভালোবাসা আজ বাজারে বিকোয়,
এক হাট হতে আরেক হাটে যায়।
ভালোবাসা নিয়ে চলে অহির্নিশ ছিনিমিনি।
নিষ্পাপ ফুলগুলো পদপিষ্ট হয়
মানবতা তখন মূক হয়ে রয়।
শ্বাপদের থাবা যখন কলিগুলোকে ছিন্নভিন্ন করে
একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে
মন আবার প্রেয়সীর খোলা পিঠে ডুব মারে।
চাই না মন ভোলাতে পূর্নিমার চাঁদ কিংবা প্রেমিকার চাঁদ মুখ।
শুধু চাই প্রতিটি শিশুর জন্য পৃথিবী নিরাপদ হোক।
অস্তাচলের দিনগুলো
সময়ের নিয়মে সময় বয়ে যায়। আহ্নিক গতিতে দিন–রাত বদলায়।
জলবায়ুর তারতম্যে কভু সোনালী রোদ্দুর,
কভু মেঘলা ধুসর ।
আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতির প্রভাব
যেন মনেরও উপর!
কখনও ঘনঘোর মেঘলা,
বৃষ্টি এক পশলা,
আবার এক ফালি রোদ দেয় উঁকি
দিয়ে মেঘকে ফাঁকি।
দিন শেষে সূর্যটার প্রস্থান ,
চারদিকে বেজে উঠে আঁধারের গান।
অস্তাচলে সূর্যটা ডুব দেয়,
তবু সে জানে,
পৃথিবীর অপর সীমানায়
কেউ একজন
আছে তার আশায়।
ঝরা পাতার মতো কিছু স্বপ্ন ঝরে যায়।
ভগ্নাংশ আমাকে আবার জড়ো করি,
ঝরা পাতাগুলোকে কুড়াই।
ঝরা পাতাকে বলি,
আমি থাকব অপেক্ষায়।
আবার এসো ফিরে
যখন হবে সময়।
ছোটদের ছড়া:
লক্ষ্মী মাগো একটু শোন
চাই না দামী মোবাইল ফোন।
তোর সময় থেকে একটু সময়
আমায় মাগো দিবি?
দু হাত বাড়িয়ে আমায় তুই
কোলে তুলে নিবি?
চাই না আমি টেডি বিয়ার
ঘুমের সময় বুকে নেয়ার।
তোর বুকের ওমে জড়িয়ে
দে মা আমায় ঘুম পাড়িয়ে।
চাঁদ, তারা আর সূয্যি মামা
জানি তারা দিবে না সাড়া।
তবু তাদের ডাক দিয়ে মা
আমার কপালে টিপ টা পড়া।
তোর টিভি দেখার সময় আমি
করি যখন দুষ্টুমি
রাগ করে মা দিসনে বকা।
তোর মনোযোগ চায় যে খোকা।
এক্স বক্স আর দামী খেলনা
সব হবে যে ফেলনা
মা যদি হয় খেলার সাথী
লুকোচুরি খেলায় মাতি।
চলো আবার একটা যুদ্ধ করি।
চলো আবার একটা যুদ্ধ করি।
ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নগুলো
নতুন করে জুড়ি।
আবার একটা যুদ্ধ
অস্তাচলের সূর্যটা ধরে রাখার জন্য।
আবার একটা যুদ্ধ
অকালে ঝরে পরা কুড়ি গুলোর জন্য।
আমাদের নির্লিপ্ততায়
যে সাপগুলোর বিষ বাষ্পে
বাতাস হয়েছে ভারী!
বাংলার আলো বাতাস নির্মল করতে
এসো আবার একটা যুদ্ধ করি।
বলেছিলে ভালোবাস সমুদ্র সমান।
বলেছিলে ভালোবাস সমুদ্র সমান।
সমুদ্র হয়নি কখনও মাপা,
জানি না তার দৈর্ঘ্য , প্রস্থ, গভীরতা।
শুধু জানি আমার চোখে আজ
সমুদ্রের বসবাস।
নোনা জলে উঠায় ঢেউয়ের জ্বলোৎছ্বাস।
হয়নি ভেজা দুজনার শ্রাবণধারায়
আমি একাকী ভিজে যাই
নোনা বর্ষায়।
মাধবীলতায় আজও ফোটে ফুল
শুধু সেই ফুলে সাজে না আমার এলো চুল।
সাহারা, কালাহারী নামই শুনেছি শুধু,
যাইনি সেখানে কভু।
তবুও তুমি বিনা এ হৃদয়
লাগে যে মরুময়।
ভালোবাসা বনাম রসায়ন!
ভালোবাসা বনাম রসায়ন!
ভালোবাসা কি!
ভালোবাসা নাকি
শরীরের প্রতি শরীরের আকর্ষন!
মানব শরীরের এক সাধারন রসায়ন।
পার্কের বেন্চিতে বসা
ষাটোর্ধ দম্পত্তি
গভীর ভালোবাসায়
ধরেছিল একে অপরের হাত।
মিথ্যে করে রসায়নের প্রবাদ!
ভালোবাসার ভাবাবেগ
নাকি মস্তিষ্কের নিউরনের যোগাযোগ!
তবু কিছু ভালোবাসা টিকে থাকে
যোগাযোগ বিহীন।
হাজার মাইল দুরত্বেও হয় না তা মলিন।
কেহ বলে ভালোবাসা মনের রোগ!
হাসিমুখে মানুষ করে সেই রোগ ভোগ।
রসায়ন, যুক্তিবিদ্যা সব করে ভুল,
পৃথিবীতে ফোঁটে ভালোবাসার ফুল।
সবাই বলে তুমি নাকি থাকো
সবাই বলে তুমি নাকি থাকো
তারার দেশে
ওই দুর আকাশে মিটমিটিয়ে
থাকো তুমি হেসে।
তাই তো আমি ডাক্তার নয়
ইন্জিনিয়ার নয়
হবো মহাশূন্যচারী।
আসব ঘুরে মাগো আমি
তোমার তারার বাড়ী।
লুকাতাম যখন দুষ্টুমির ছলে
কাঁদতে মা তুমি আমায় না পেলে।
এখন তুমি কেমন করে
থাকো বলো আমায় ছেড়ে!
তারার দেশ কি বলো মাগো
এখান থেকেও ভালো?
হাজার জোনাক জ্বলে নিভে
দেয় কি তোমায় আলো?
বলতে আমায় মানিক রতন,
সেই রতনকে ফেলে মাগো
থাকো কেন দুরে এখন?
‘ভালোবাসার দিনলিপি’
একটা সকাল আলসেমিতে
লেপের তলায় খুনসুটিতে
কফির কাপ ছলকে যায়
হঠাৎ যেন তোমার ছোঁয়ায়।
আলতো করে রোদটা ছোঁয়
তোমায় আমায় ভোর বেলায়।
এমন ভাবে হোক না শুরু
তোমার আমার দিনগুলোর।
থাক না হিসেব, থাক পড়ে থাক
যত্তসব চাল চুলোর।
সকাল গড়িয়ে হোক দুপুর,
শান্ত শীতল প্রেমের পুকুর।
আঁজলা ভরে সেঁচব জল,
খুঁজব দুজন প্রেমের তল।
নাই বা পেলাম তল খুঁজে তার,
ডুবলে বলো কি ক্ষতি আর!
বারান্দাটায় বিকেল বেলায়
উত্তরী বায় চুলটা উড়ায়,
আলতো ছোঁয়ায় চুল সরিয়ে
দিও কপালে চুমুর টিপ পরিয়ে।
তোমার আমার ভালোবাসায়
সূর্য লাজে মুখ লুকায়!
রাতটা দিয়ে তোমায় আমায়
দিগন্তে সে নেয় বিদায়।