গ্র্যান্ড হক টাওয়ার

২২ জানুয়ারী২৪ জানুয়ারী

জানুয়ারীর ২২ তারিখ সন্ধ্যা আমার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং স্মৃতিময়। ফেণী এসে রীতমত আঁটঘাট বেঁধে একসাথে অনেকগুলো প্রিয়জনের সাথে দেখা করে ফেললাম। চট্রগ্রাম থেকে আম্মা আর আপাকে নিয়ে ফেণী বাসায় পৌঁছে দুপুরের খাওয়াদাওয়া আর রেষ্ট সেরে বেলা গড়িয়ে গেলো।

তুহিন

সন্ধ্যার পর তুহিনকে ফোন করলাম, এবং ফোনে পেয়েও গেলাম। তুহিনউলহক তুহিন, আমার প্রাইমারী স্কুল থেকে বন্ধু। যাকে বলে হরিহর আত্মা,  সেই ছেলেবেলা থেকে। সত্যি কথা বলতে আমরা স্থাণীয় যারা একেবারে প্রাইমারী স্কুল থেকে একসাথে পড়েছি তাদের অনেকেই এখনো ফেণীতে আছে। ওদের সাথে দেখা হয়, খুব ভালো লাগে। এদিকে বন্ধু ফারুক হাজারীর কড়া নির্দেশ, কোনো অবস্থায় একা কোথাও যাওয়া যাবেনা।হেগুনেরেবিশ্বাস নাই।হেগুনমানে পুলিশ। পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে বলবেপাইছি“, তারপর ধরে নিয়ে হয়রানি বেইজ্জতি করবে। সন্ধ্যাবেলায় ফারুকই আমাকে তুহিনের ওখানে নামিয়ে দেবে বলে রিকশায় উঠালো। তুহিনের সাথে দেখা করতে যাবার পথে স্বপন ফোন করলো। ক্লাসমেট নুরুল আফসার স্বপন, সেও মিজান রোডের স্থানীয় তবে তখন সে কলেজ রোডে শিমুর শিক্ষা বিপনীর সামনে। প্রথমে সেখানে গিয়ে স্বপন আর শিমুর সাথে দেখা করলাম। কলেজ জীবনের পর স্বপনের সাথে বোধহয় এই প্রথম দেখা। তবে শিমুর সাথে নিবিড় যোগাযোগ ছিলো, কারন আমাদের বাসা কাছাকাছি। স্বপনকে বললাম তুহিনের সাথে দেখা করবো, স্বপন বলে চল আমিও যাই।

তুহিনের বাবা মাহবুবুলহকপেয়ারা, উনি সম্পর্কে আমার দাদা, আমার দাদীর ফার্স্ট কাজিন। সত্যি কথা বলতে ফেণীর প্রাচীন স্থানীয় যারা তারা সবাই কোনো না কোনো ভাবে রক্তের সম্পর্কে সম্পর্কিত। পেয়ারা দাদুর ছেলেরা সবাই আমার চাচা হবার কথা কিন্তু আমিচাচাডারি শুধু শায়ের চাচা কে। পেয়ারা দাদুর বড় ছেলে। তার পরের সবাই ভাইয়া। মুছুম ভাই, শাহীন ভাই, তারিণ ভাই, তুহিন আর ইমন। ইমনও আমাকে ডাকে ভাইয়া, আফটারঅল পাইলট হাই স্কুলের ছোট ভাই। সবার ছোট এবং সবচেয়ে সুইট ইমন এখন বড় হয়ে লম্বায় আমাকেও ছাড়িয়ে গেছে, মাশা আল্লাহ্।

আগে কখনোগ্র্যান্ড হক টাওয়ারএর সামনে আসিনি। রাস্তার উল্টো দিক থেকে বিশাল এই অবকাঠামোর সামনে দাঁড়িয়ে ভাবার চেষ্টা করছি আগের সেই পুরোনো পেয়ারা দাদুর দক্ষিনমুখি বাড়ী। সামনে বিশাল উঠোন। তারপর কাছারীঘর, তারও সামনে আরো এক চিলতে উঠোন। তারপর বাউন্ডারী, তারপর রাস্তা। রাস্তার নাম মিজান রোড। আমি যেখান থেকে দাঁড়িয়ে গ্র্যান্ড হক টাওয়ার দেখছি সেখান থেকেে আমার মুখোমুখি বিপরীতে হাতের ডানে পেয়ারা দাদু আর দাদীজানের কবর দেখতে পেলাম। যত্মের সাথে সংরক্ষন করা হয়েছে, পার্থক্য একটাই সকালের মিষ্টি রোদ এখন আর কবরের রঙ্গীন পাতাবাহারের উপর দিয়ে ঝিকিমিকি দ্যূতি ছড়ায় না। আশপাশের ইটের দালান ভেদ করে রোদ আর ওই পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনা। 

এখনও বোঝার চেষ্টা করছি ঠিক কোথায় কাছারী ঘরটা ছিলো, যেখানে ছিলো ফেণীর বিখ্যাত কচিকাঁচার আসর। সোজা নীচের দিকে খালি যায়গার মত, ওটা বোধহ কার পার্ক। ডানে আর বাঁয়ে সিঁড়ি, আবার মাঝখানে প্রশস্থ সিঁড়ির সারি। প্রথম কয়েকটি তলা শপিং মল তার উপরে সব ফ্ল্যাট। স্বপন আর আমি গল্প করছি আর অপেক্ষায় আছি তুহিন কখন নামবে। এর মধ্যে শায়ের চাচার সাথে দেখা, সালাম দিয়ে জানতে চাইলাম চিনতে পারছেন কিনা। উনি হেসে ফেললেন, না চেনার কোন কারন আছে? শাহীন ভাইর সাথেও দেখা হয়ে গেলো নীচতলায়। গল্প হল কিছুক্ষন। এদিকে স্বপন সেদিনের মত বিদায় নিলো। 

টেলিফোনে তুহিন বলে দিলো কিভাবে উপরে উঠতে হবে। দুটো লিফট, পশ্চিম দিকেরটা দিয়ে উঠে তুহিনের বাসায় যাবার পথে মাসুম ভাইর সাথে দেখা। ছেলেবেলা থেকে মাসুম ভাইকে হাসিখুশী, মজার মানুষ হিসেবে দেখে এসেছি, এখনও সেই আগের মতই আছেন। দেখে ভালো লাগলো। 

তুহিনের ফ্ল্যাটে বসে অনেক গল্প হল আমার আর তুহিনের। গল্পের বেশীরভাগই পাইলট হাই স্কুলের সময়ের সব স্মৃতি নিয়ে। এক পর্যায়ে ইমন এলো, ওর সাথেও কথা হল অনেক। ইমনের সাথে শেষ দেখা হয়েছিলো সম্ভবতঃ ২০০১ সালে, সময় যে কত দ্রুত চলে যায় সেটা হাড়ে হাড়ে বুঝলাম। ইমনের সাথে সেলফি তোলা হল না। আমি পুরোনো দিনের মানুষ, সেলফির কথা মাথায় আসেনি। 

একই ভাবে সেলফির কথা মাথায় আসেনি বায়েজীদ ভাইয়ের সাথে দেখা করার সময়ও। তুহিন আমাকে বায়েজীদ ভাইয়ের চেম্বার পর্যন্ত এগিয়ে দিলো। ও সাথে না থাকলে আমি চিনতে পারতাম না, ফেণী এখন আর আগের ফেণী নেই। আমার মত অভাগারা নতুন কসমোপলিটন ফেণীতে প্রায়ই পথ হারিয়ে ফেলে। 

ডাঃ তবারক উল্যাহ্ চৌধুরী (বায়েজীদ), শ্রদ্ধাভাজনেষু, গুরুজন। আমাদের সবার প্রিয় ডাঃ বায়েজীদ ভাই। রোটারী ক্লাব অফ ফেনী সেন্ট্রালে থাকাকালীন তাঁর সাথে সমাজ সেবায় অংশ নেবার সুজোগ হয়েছিলো। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সালের শেষ পর্যন্ত যতদিন দেশে ছিলাম সব সময় নিবিড় ভাবে রোটারী ক্লাব অফ ফেণী সেন্ট্রালে কাজ করেছি। ফেণীর বেশ কজন গুনী মানুষের সংস্পর্শে ধন্য হয়েছি।  সেসব সুখময় স্মৃতি কখনো ভোলার নয়। বায়োজীদ ভাইয়ের সাথেও অনেক কথা হল। অল্প সময়ে নানান বিষয়ে কথা হল, গল্প হল। একটা বিষয় লক্ষ করলাম, বায়েজীদ ভাইয়ের কিছু পয়েন্টের সাথে স্থানীয় সাথে অনেকের মিল পেলাম। দেশের সকল শ্রেনীর মানুষের হাতে যথেষ্ঠ পরিমানে টাকা আছে, না খেয়ে কেউ আর মরে যায় না। জাতি আজ অর্থনৈতিক মুক্তির দ্বারপ্রান্তে। অথচ অদ্ভুত সত্য হল,  ফেণীসহ সারা দেশের যাবতীয় উন্নয়ন, উন্নতি কাউকে খুব একটা ইমপ্রেস করতে পারছেনা। সব কিছুর মধ্যে যেন কেমন একটা প্রলেপ (cosmetic layer) দেওয়া যার পেছনে আদৌ কিছু নেই। প্রলেপ সরে গেলে সব খালি, বিশাল শূন্যতা। মানুষের এতশত উন্নতি দিয়ে কি হবে, যদি সুশিক্ষা, ন্যায়পরায়নতা আর মনুষত্বই না থাকে? উন্নয়নের জলোচ্ছাসে কিছু জরুরী বিষয় ভেসে গিয়ে হয় ডুবে গেছে নয়তো হারিয়ে গেছে। এমন সব মানুষ আজকাল অর্থ আর ক্ষমতার মালিক যাদের কাছে এই বেসিক অথচ জরুরী বিষয়গুলো নেই। সেগুলো হচ্ছে, ‘ব্যক্তিত্ব‘, ‘সততা‘, ‘বিবেক‘, ‘বিচারবুদ্ধি‘, আরপারিবারিক ঐতিহ্য (family background)’সেল্ফ রেসপেক্টকে তো রাষ্ট্রীয়ভাবে বিলূপ্তই করা হয়েছে। 

ফারুক হাজারী

পরদিন আবার বেলা করে বের হয়ে যথারীতি ফারুক হাজারীসহ এহছানের অটবিতে চলে গেলাম। কিছুক্ষন থেকে ফারুক চলে এলো, আমি রয়ে গেলাম কারন সেখানে বাবু, রহমত আর তুহিন আসবে। বাবু এলো, রহমত এলো, রহমত কে কত বছর পর দেখলাম জানিনা। সেই প্রথম শ্রেণী মানে ক্লাসওয়ান থেকে আমরা বন্ধু। এত বছর পর আবার এক হওয়া, কি যে সৌভাগ্য। গল্পের বিষয়বস্তু হচ্ছে ছেলেবেলার যাবতীয় বাঁদরামী। শত শত লক্ষকোটি ঘটনা, এক বসায় কি এত গল্প শেষ হয়? 

আমি, এহছান, বাবু আর রহমত

এহছানুল হক এহছান হচ্ছে মাষ্টার পাড়ার নুরুল হক মাষ্টার সাহেবের ছেলে। বাবুমহিবুর রহমান মহিব্বা, যার ডাকনাম জয়। আবার সম্পর্কে আমার ফুপাতো ভাই। ওর মা ডেইজী ফুপু আব্বুর খালাতো বোন। বাবুর বাবা আমার ফুপা প্রফেসর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা, আমরা যখন ছোট তখন তিনি মারা যান। বাবু একমাত্র পূত্র সন্তান, বাবামা আর বড় বোনেরা আদর করে বাবু ডাকতো, আমরাও সেই থেকে বাবুইয়া বলে ডাকা শুরু করলাম আর সেটা ওর আসল ডাকনাম হয়ে গেলো। বন্ধুরা জয়কে বাবু নামেই চেনে।

মোহাম্মদ রহমত উল্যাহ্, অর্থাৎ রহমইত্তা। প্রথমে নাম ছিলো গোলাম রসুল। আমাদের পাইলট প্রাইমারী স্কুলের হুজুর স্যার বললেন আমাদের রসুলুল্লাহ্ (সঃ) এর কোন গোলাম ছিলোনা, এটা হতে পারে না। নাম বদলাতে হবে, হুজুর স্যার নাম বদলে দিলেন। সেই থেকে ওর নাম রহমত উল্যাহ্। পৃথিবীল সকল সরলতা নিজের মধ্যে নিয়ে রহমত আমাদের মাঝে এখনও সেই ছেলেবেলাররহমইত্তাহয়ে আছে। তবে হারামীটা আমার স্বপ্ন চুরি করেছে, এখন সে মহিলা কলেজের প্রফেসর। আমার বড় শখ ছিলে মেয়েদের কলেজের মাষ্টার হবার, ইংরেজীর মাষ্টার। আফসোস, আমি রহমতের মত ভালো ছাত্র ছিলাম না।

তুহিন আসেনি, কিন্তু কুসুম এলো। ওরে কান্ড রে! কত বছর পর কুসুমের সাথে দেখা? আমার যতদুর মনে পড়ে শেষ দেখা হয়েছিলে এইচ.এস.সি পরীক্ষার পর। দল বেঁধে সবাইজোলাভাতিজাতীয় একটা পিকনিক করেছিলাম কমার্স বিল্ডং এর সামনে। ছবিও তুলেছিলাম। এখনও ছবিগুলো আছে। ছবিগুলো দেখি আর ভাবী, তারুণ্য এত সুন্দর কেন? অপরূপ স্বর্ণালী অতীত। প্রায় তিরিশ বছর হয়ে গেলো কিন্তু আমার প্রতি কুসুমের ভুল ধারনা রয়েই গেলো, আমি নাকিভিংচা। এরে কুসুম, আমি একজন সিরিয়াস মানুষ।এক্কেরে বিদ্যা 

মাগরেবের নামাজের পর দেখা করতে গেলাম মুক্তা মামার সাথে। মুক্তা মিল্লাত। পাঁচগাছিয়া রোডে যেখানে মুক্তা মামাদের বিশাল উঠানওয়ালা খোলামেলা বাড়ী সেখানে এখন মার্কেট হয়ে যাওয়ায় কিছু চিনতে পারছিলাম না। রোটারী ক্লাব অফ ফেণী সেন্ট্রালে থাকতে মুক্তামামাকে সব সময় পাশে পেয়েছি। মামাও হাঁসি মুখে সময় দিতেন, আর পরিশ্রম করতেন কিন্তু কখনও বিরক্ত হতে দেখিনি। সত্যি কথা বলতে, সমাজসেবা করতে হলে একটা স্পেশাল মানসিকতা থাকতে হয়। আল্লাহ্ সবাইকে সেই স্পেশালিটি দেন না। হাজারো সেবামুলক সংস্থার মাঝে রোটারী ক্লাবও আছে, রোটারীয়ান হওয়াও কঠিন কিছু না, কিন্তু সেবক হওয়া টাফ। মুক্তা মামার সাথে কাজ করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল উনার পজিটিভ এ্যাটিচিউড। যে কোনো বিষয়, কাজ যাই হোক না কেন উনি কি এক যাদুর বলে পানির মত সহজ করে ফেলতেন।আমার জন্য আরেকটা সারপ্রাই্জ ছিলোদিপুল‘, মুক্তা মামার ছেলে। সেই ছোট্ট দিপুল কত বড় হয়ে গেছে! মাশা আল্লাহ্। দিপুল এখন বাংলাদেশের রোটারেক্ট ডিস্ট্রিক্ট সেক্রেটারী। তার এই অর্জন ফেণীল জন্যেতো বটেই, আমাদের জন্যেও অনেক সম্মানের। 

মুক্তামামা, দিপুল আর মহিম

মুক্তা মামা আমাকে এমনি এমনি ছাড়লেন না। খাওয়াদাওয়া করালেন পাশের রেষ্টুরেন্টে। এর মধ্যে দিপুল আমার জন্য আরো সারপ্রাইজ রেডি করেছে। কিছুক্ষন অপেক্ষার পর আমার সাথে দেখা করতে এলো সোহেল আর মহিম। সেই সময়ের রোটারেক্ট ক্লাব অফ ফেণী সেন্ট্রালের প্রেসিডেন্ট আর সেক্রেটারী। একসাথে এতগুলে প্রিয়জনের সাথে দেখা হয়ে গেলো। কি যে ভালো লেগেছে সেই সন্ধ্যা, ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা। 

মহিম, মুক্তা মামা, আমি আর সোহেল। কত বছর পর দেখা।

সেই রাতেই এগারোটার তূর্ণানিশীথায় ঢাকা যাবার টিকেটের ব্যাস্থা করে দিলো বাবু। রেল যোগাযগের যতই দুরবস্থা হোক না কেন টিকেটের চাহিদা আকাশচূম্বী। শুধু টিকেটের ব্যাস্থা না, বাবু আমার জন্য সেই মধ্যরাতে ষ্টেশনে চলে এলো। ফারুক হাজারীর মত বাবুরও একই কথা, একা ছাড়া যাবেনা। যখন বাবুকে বললাম, “এরে আঁই নিজেও হুলিশ। আঁরে ডিশটার কইরবো কিল্লাই?” আমার কথা বাবু তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলো, “এইসব বিটিশ হুলিশের বেইল নাই বাংলাদেশে। আগে মান ইজ্জত তারফরে বিটঠিশ্।কথা সত্য। মান সম্মান নিয়ে বাস করা এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে পুলিশ আনলিমিটেড ক্ষমতার অধিকারী। যা ইচ্ছে তা করতে পারে। ওদের থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে যা চায় দিয়ে দেওয়া, নয়তো সংঘবদ্ধ থাকা, অথবা সরকারী নেতা হয়ে যাওয়া। কিন্তু পকেটে কৌশলে ইয়াবা ঢুকিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা, এটা কেমন ছোটলোকি?

ফেনী ষ্টেশনের প্ল্যাটফর্মে

নাইট ট্রেইন তূর্ণা নিশীথা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে ঢাকার দিকে

স্মৃতিময় টিকেট

কমলাপুর রেল ষ্টেশন। পাক্কা সতের বছর পর।

রাত এগারোটার ট্রেন হেলেদুলে বারোটারও পরে এলো। আমার সীট শোভন চেয়ার। সীট পেয়েছি তবে এখানো ওখানে লোকজন ফ্লোরেও ঘুমাচ্ছে, ঘুমাক। আমি এখন বাংলাদেশে, যা দেখি তাই ভালো লাগে। বাবু একদম ট্রেন পর্যন্ত উঠিয়ে বিদায় নিলো। ধন্যবাদ, বন্ধু আমার, ভাই আমার।  আধো ঘুম আধো জাগরনে কিভাবে যেন ঢাকা চলে এলাম। কমলাপুর যখন পৌঁছাই তখনও সূর্য্য ওঠেনি। ভোরের আলো ফোটার আগে ঘরে পৌঁছে গেলাম।

নাহ্ ট্রেন জার্নি একেবারে অখাদ্য হয়ে যায় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Post comment