আমরা ৮৭
১৭.০১.২০১৯
সন্ধ্যার কিছুক্ষন পর বিরিঞ্চি মেঝো মামার বাসা থেকে কদলগাজী রোড ধরে হাঁটতে হাঁটতে সেখান থেকে ফেনী রেল ষ্টেশনে উঠলাম। রেল লাইনের উপর দিয়ে পায়ে হেঁটে পার হবার সময় ফিরে গিয়েছি বহু বছর আগের সেই ছোটবেলায় যখন কোনো কারনে রেল ষ্টেশনে আসতাম, উত্তেজনায় সারাক্ষন বুক ধুকপুক করতো। ‘ইষ্টিশান’ বলতেই রেল ষ্টেশন বোঝাতো। প্রতিটি মুহুর্ত ছিলো সচকিত, কিংবা রোমাঞ্চিত হবার। মূল প্ল্যাটফরম এখন লম্বায় দ্বিগুনেরও বেশী তবু মনে আছে আগের ছোটখাট ষ্টেশন গুরুত্বের দিক থেকে অনেক বড় ছিলো কারন সেটা ছিলো ফেণী জংশন। জংশন কাহাকে বলে? ‘যেখান থেকে কমপক্ষে তিনটি আলাদা গন্তব্যে লাইন চলে গিয়েছে সেই ইষ্টিশানকে জংশন বলে।’ তৃতীয় গন্তব্য বিলোনিয়ার আলাদা ট্রেন সার্ভিস ছিলো, লস-এর অজুহাতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিলোনিয়ার ট্রেনের কয়লা ইঞ্জিন দেখতে আর কু-উ-উ শব্দের হুইসেল শোনার জন্য প্রাইমারী স্কুল থেকে মাঠ পেরিয়ে কলেজের পেছনের গেট দিয়ে ছুটে আসতাম ইষ্টিশানে। ওভারব্রীজের উপর দাঁড়ালে যখন বিশাল কালো কয়লার ইঞ্জিন ঘন ধোঁয়া আর স্টীম ছাড়তে ছাড়তে নীচ দিয়ে যেত তখন ধোঁয়ায় বাষ্পে আশপাশের কিছু দেখা যেতো না। তবু ভয় পেতাম না।
চারিদিকে তাকিয়ে দেখলাম, সন্ধ্যার পর আঁধার হয়ে গেছে কিন্তু ষ্টেশন আগের মত আলো ঝলমলে নয়। সাইজে বড় হলেও গোটা ষ্টেশন কেমন খাঁ খাঁ করছে। চারিদিকে অযত্মের ছাপ। বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেনগুলোর মত রেল-ষ্টেশনেরও করুন হাল। ওভারব্রীজটা এখনও সেই আগের জায়গাতেই আছে তবে ছেলেবেলায় যেমন মনে হত এখন মনে হচ্ছে তার চেয়ে অনেক ছোট। ছাদের কয়েক জায়গায় ঢেউনটিন নেই, উড়ে গেছে হয়তো। ছোটবেলায় যখন ওভারব্রীজের উপর উঠতাম, মনে হত কত উঁচুতে উঠেছি। মাঝখানের লাইন ধরে দ্রুতগামী ট্রেন যাবার সময় ওভারব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে শক্ত করে রেলিং ধরে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। ট্রেন যাবার সময় মনে হত আমিও প্রবল বেগে বিপরীত দিছে ছুটছি। উফফ্ কতবার যে উত্তেজনায় শিহরিত হয়েছি!
ষ্টেশন থেকে বেরিয়ে আরো হতাশ হলাম। আবাসিক একটা হোটেল ছিলো, নাম মনে নেই। বেচু মিঞার হোটেল, রেলওয়ে ক্লাব বিল্ডিং, পুরোনো মসজিদ ঘর কিছু নেই। একটা সাদামত বিল্ডং দেখা যাচ্ছে তবে খালি। ষ্টেশনের বাইরে কোথাও নামের সাইনবোর্ড দেখতে পেলাম না, কোনো বাতি নেই। একটা জেলা শহরের রেল ষ্টেশন, বাইরে থেকে মনে হয় অন্ধকার আর ভেতরে ইতস্ততঃ টিমটিমে আলো। সেলুকাস!
হাঁটতে হাঁটতে সামনের দিকে যাচ্ছি, এটা আমাদের ঐতিহাসিক ষ্টেশান রোড। ডানে বাঁয়ে খুব একটা পরিরর্তন হয় নি। সামনে, খানিক দুরে আলোর রোশনাই দেখা যাচ্ছে, একদিকে দুলাল সিনেমা হল, তার উল্টোদিকে মার্কেট, তার ভেতর দিয়ে একটু এগিয়ে গেলে গোলাপ মিঞার মার্কেট। ওটার একটা সুন্দর নাম আছে, এখন মনে পড়ছেনা। সামনে ডানে জয়দের বাসা. . .
জয়ের বাসার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় অভ্যাসবসে উপর দিকে তাকালাম। সবকিবছু আবিকৃত আছে, পুরোনো দিনের ডিজাইনে করা তিনতলা ঘর। সামনে বারান্দা, বাহারী রেলিং। জরাজীর্ণ অথচ অদ্ভুত সুন্দর। বারান্দা, ঘর সব অন্ধকার। হঠাৎ সারা শরীর থরথর করে কাঁপিয়ে হেঁচকি দিয়ে কেঁদে ফেললাম। কান্নাকাটি আমার জন্য অসম্ভব ব্যাপার, আজ এমন হচ্ছে কেন? পাশে কয়েক ধাপ সিঁড়ি টপকে ফেণী লাইব্রেরীর সামনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে একটা পিলার কিংবা দেয়ালে হাত রেখে শীরের ব্যালেন্স ঠিক রাখার চেষ্টা করেছি। কতক্ষন এভাবে ছিলাম জানিনা তবে স্বাভাবিক হবার প্রানপন চেষ্টার অংশ হিসেবে শক্ত করে মুখ বন্ধ করে নাক দিয়ে লম্বা লম্বা শ্বাস নিচ্ছিলাম। কতক্ষন হবে? পাঁচ, দশ বা বিশ সেকেন্ড? ঝাপসা দৃষ্টিতে দেখছিলাম মেঝর উপর পড়তে থাকা চোখের জলের ফোঁটা। কতবছর পর কাঁদলাম? মনে করতে পারলাম না।
জয়, আমার প্রানের বন্ধু। ক্লাস ওয়ান থেকে একসাথে পড়েছি। একসাথে বড় হয়েছি। জয় এবং জয়ের পরিবারের সাথে আত্মার বাঁধনে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ছিলাম। জয়ও ছিলো আমার এবং আমার পরিবারের অংশ। লন্ডনে পরিবার নিয়ে শিপ্রা আপা আছেন, যেন মায়ের পেটের বড় বোন। আমার বিয়ের ছবিতে বন্ধুদের সাথে জয়ের উজ্জ্বল হাসিমাখা মুখ মনে করিয়ে দেয় আত্মার সম্পর্কের কথা।
আমার বিয়ের দিন সকালবেলার ঘটনা। সবাই মিলে ঢাকা রওনা হবার মুহুর্তে ফাইনাল চেক হচ্ছে, সব ঠিক ঠাক আছে কিনা। সব ঠিক ঠাক, ফুলপ্রুফ প্ল্যান। কে জানি জানতে চাইলো, ‘শেরওয়ানী পরে যাবি না ওখানে গিয়ে পরবি?’ ‘না না, পুরা রাস্তা দুলা হয়ে বসে থাকতে পারবোনা, ঢাকায় গিয়ে পরবো।’ কোথায় শেরওয়ানী? ঘরভর্তি মানুষ, হঠাৎ সব নীরব। একে অন্যের মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। বিয়ের ডামাডোলে শেরওয়ানীর কথা সবাই ভুলে গেছে। জয় বললো এটা কোনো সমস্যা হল? আমি যাবো আর আসবো, একটু অপেক্ষা করেন।
পনের মিনিটের মধ্যে বিব্রতকর একটা সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো। জয়ের শেরওয়ানী, পায়জামা, পাগড়ী, চটি সব আমার দারুনভাব ফিট হয়ে গেলো। আমার বিয়ে হল জয়ের বিয়ের পোশাকে। জীবনের নানান সমস্যায় জয় ঠিক এভাবে শুধু আমার নয়, আমাদের সবার পাশে থেকেছে।
সত্যি কথা বলতে আমরা স্থানীয় বন্ধু যারা তারা সবাই এমনই, রক্তের সম্পর্কের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় বরং বেশী।
১৯৭৭ সালের জানুয়ারী মাসে শুরুতে, যেদিন ফেণী পাইলট প্রাইমারী স্কুলে ক্লাস-ওয়ান থেকে শিক্ষা জীবনের শুরু, অর্থাৎ যাদের সাথে সেই ক্লাস-ওয়ান থেকে পড়েছি তাদের অনেকেই এখনো বর্তমান। আমার সৌভাগ্য প্রায় সবার সাথেই যোগাযোগ আছে। তখনও ওটা শুধু ছেলেদের স্কুল।
প্রথম শ্রেণীর ক্লাস বসতো দ্বিতীয় প্রকেষ্ঠে। প্রকোষ্ঠ বলছি কারন আমাদের প্রাইমারী স্কুল আসলে পাইলট হাই স্কুলের এ্যাসেম্বলী হল। পূর্ব দিকে স্টেজ, বাকী অংশ খালি। সিনেমা হলের মত। বৃটিশ আমলে এখানে হাই স্কুল স্ট্যুডেন্টদের এ্যসেম্বলী হত, একদম সাহেবী কায়দায়। পরে এই এ্যাসেম্বলী হলকে প্রাইমারী স্কুল বানানো হয়। এসেম্বলী হলের পশ্চিম দিকে ছিলো জিমনেশিয়াম। ওটা তখন ফেণীর একমাত্র জিমনেশিয়াম, অধুনিক ঢংয়ে যাকে জিম বলা হয়। চারিদিকে ফাঁক ফাঁক রডে ঘেরা বিশাল ওচু ভবন, ভেতরে ছোটখাট মাঠ অনেকটা ইনডোর স্টেডিয়ামেরম মত। আমরা ওটার ভেতর ছোটুছুটি করে খেলাধুলা করতাম, বিশেষকরে বর্ষাকালে। যাই হোক, এসেম্বলী হলে ফিরে আসি, হার্ডবোর্ড পার্টিশান দিয়ে ক্লাস ভাগ করা হয়েছে। স্টেজের উপর ক্লাশ টু, ওটা প্রথম প্রকোষ্ঠ। তারপরের প্রকোষ্ঠে ক্লাস-ওয়ান। ওয়ানের পর থ্রী, ফোর, আর একদম পশ্চিম দিকে ক্লাস-ফাইভ। ক্লাস থ্রী থেকে আবার দুটো করে সেকশান। ‘এ’ এবং ‘বি’। মেধানুসারে ক্রমিক নং মানে রোল নাম্বার হত। রোল-১ সবচেয়ে ভালো, রোল নম্বর যার সবার শেষে সে সবচেয়ে কম-ভালো (খারাপ হলে তো ফেল)। প্রথম অর্ধেক ‘এ’ সেকশানে, বাকী অর্ধেক ‘বি’ সেকশানে।
অনেক বছর পর দেখি জিমনেশিয়াম ভেঙ্গে কুৎসিত চেহারার এক সাইক্লোন সেন্টার বানানো হয়েছে। কোথায় সমুদ্র উপকুল, আর কোথায় দুর্যোগের আশ্রয়কেন্দ্র। হাস্যকৌতুকেরও একটা সীমা থাকা দরকার। আমাদের দেশটাকে যারা চালায় তাদের একটা কমন বৈশিষ্ট হল নিজ দেশের জনসাধারনকে গরু ছাগল মনে করা।
আমার স্পষ্ট মনে আছে সবার আগে বন্ধুত্ব হয়েছিলো মিজানের সাথে, মিজান হাজারী। কলেজে উঠে মিজানের ভাই মাসুদ হাজারীও আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে যায়। বলরাম সেনগুপ্ত, ফেনী মাষ্টারপাড়ার প্রবেশ মুখে কানন সিনেমা হলের উল্টোদিকের বিখ্যাত গুরুচক্র, বলরাম ওখানকার বনেদী ব্রহ্মন পরিবারের সন্তান, বিশিষ্ট সাংবাদিক নারায়ন সেনের ছোটভাই। বলরামের আরেক ভাই ভিনুদা আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু। তাকিয়া রোডে ঢোকার মুখে, কোনায় ওদের একটা দোকান ছিলো। বলরামের নামের সংক্ষেপ ‘বলু’ ওকে এখনও এই নামেই ডাকি আমরা। ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে ফিন্যন্স এ অনার্স-মাস্টার্স করে দীর্ঘদিন ব্যাংকে চাকরী বাকরী করে এখন পরিবার নিয়ে ক্যানাডায় গিয়ে থিতু হয়েছে।
মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। ওদের বাড়ী দাউদপুর রাইস মিলের পেছনে। প্রায় যেতাম, ফরিদও আসতো বাসায়। ফরিদ এখন নামকরা গ্রাফিক ডিজাইনার।
মোহাম্মদ রহমত উল্যাহ্, অর্থাৎ রহমইত্তা। প্রথমে নাম ছিলো গোলাম রুসুল। আমাদের হুজুর স্যার বললেন আমাদের রসুলুল্লাহ্ (সঃ) এর কোন গোলাম ছিলোনা, এটা হতে পারে না। নাম বদলাতে হবে। সেই থেকে ওর নাম রহমত উল্যাহ্। পৃথিবীল সকল সরলতা নিজের মধ্যে নিয়ে রহমত আমাদের মাঝে এখনও সেই ছেলেবেলার ‘রহমইত্তা’ হয়ে আছে। তবে হারামীটা আমার স্বপ্ন চুরি করেছে, মহিলা কলেজের প্রফেসর। আমার বড় শখ ছিলে মেয়েদের কলেজের মাস্টার হবার। আফসোস, আমি রহমতের মত ভালো ছাত্র ছিলাম না। আরো আছে আওঙ্গজেব মাহমুদ চৌধুরী। ভীষন সুন্দর, ফর্সা লম্বাটে আওরঙ্গজেইব্বা এখনও মেয়েদের হার্ট থ্রব। হাই স্কুলে উঠে জেনেছি ওর ডাকনাম কল্লোল। তুহিন-উল-হক তুহিন্না, মাহবুবুল হক পেয়ারা (আমারা দাদীর কাজিন) সাহেবের ছেলে। পেয়ারা দাদুকে সবাই চেনে। উনার বাসার সামনে বড় কাছারী ঘর, ওখানে কচিকাঁচার আসর বসতো।এহছানুল হক এহছাইন্না, নুরুল হক মাষ্টারের ছেলে। মহিবুর রহমান মহিব্বা, যার ডাকনাম জয়। একমাত্র পূত্র সন্তান, বাবা-মা আর বড় বোনেরা আদর করে বাবু ডাকতো, আমরাও সেই থেকে বাবুইয়া বলে ডাকা শুরু করলাম আর সেটা ওর আসল ডাকনাম হয়ে গেলো। মৃধা বাড়ীর হারুন-উর-রশীদ, ওকে জয়নাল ডাকলে তাড়া করতো। বাঁশপাড়ার অরূপ কান্তি বিশ্বাস, ফেণীর বিখ্যাত টাউন ফর্মেসীর মালিকের ছেলে, ডাকতাম অরূইপ্পা, ওর ডাক নাম ছোটন। ছিলো ফারুকুল ইসলাম সুজন, ফেণীর একমাত্র চোখের ডাক্তার জুলফিকার ইসলাম সাহেবের ছেলে। প্রথম প্রথম ফারুইক্কা, তারপর সুজইন্না। গুদাম কোয়ার্টারের জাভেদ আর মোটকা আরিফ ওরফে আরিপ্পা। মোঃ আবু নাসের। বিলাসী সিনেমা হলের মালিকের ছেলে মামুন। লিটন, আমরা ওকে ডাকতাম ব্যারেল লিটন।
ছিলো ইরান (পরে অন্য স্কুলে চলে যায়), ফেন্টশ, সঞ্জয়, সঞ্জীব, বিষ্ণু, মোয়াজ্জেম হোসের মিঠু, নুরুল আমিন (টিপু), মোঃ কেরামত উল্লাহ্ (কেরামইত্তা), সৈয়দ শামীম, সৈয়দ আমজাদ হোসেন (আমজাইদ্দা)। আমজাদ এখনো সেই আমজাইদ্দাই। আরো মনে পড়ে বাবুল দেবনাথ, অলক কুমার চ্যাটার্জী (অলইক্কা), শিবু প্রসাদ বৈদ্য (বৈদ্যইয়া)। বৈদ্দইয়া ছিলো বেঁটে খাটো একদম বাবু বাবু চেহারা, ক্লাস এইটে উঠার পর কোথায় হারিয়ে গেলো জানিনা।
আর ছিলো আবু সাঈদ জয়, সেই ক্লাস-ওয়ান থেকে। উজ্জ্বল ফর্সা, মিষ্টি চেহারার অসম্ভব সুন্দর সেই আবু সাঈদ্দা ছিলো ক্লাসে সবচেয়ে উজ্জ্বল, আলোময়। যত বড় হচ্ছিলো, সৌন্দর্য বাড়ছিলো। সাথে ছিলো ভদ্রতাবোধ, মার্জিত আচরণ। আমার সব হ্যান্ডসাম বন্ধুদের ভীড় থেকে জয়কে আলাদা ভাবে দেখা যেতো।
এর পর একে একে বন্ধু বাড়তে থাকলো। ক্লাস-থ্রীতে পরিচয় হল ফরিদ-আল-আমিনের সাথে। আমি আর ফরিদ অনেক ক্লোজড। বন্ধুর সংখ্যা আরো বাড়তে থাকলো। আরিফুর রহমান অপু, হুমায়ুন কবীর সোহেল, মিজানুর রহমান মিজান, নাজমুল হোসেন মোর্শেদ (এ্যাডভোকেট আবুল হোসেন সাহেবের ছেলে), নাছিম, সারওয়ার, আরিফুর রহমান হাজারী বাবলু, দুলাল,
কিন্তু জয়ের এভাবে চলে যাওয়াটা আমাদের সবার জন্য অনেক বড় দুর্ঘটনা। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে জয় আমাদের সবাইকে একা করে দিয়ে চলে যায়।
জীবনে প্রথম জয়ের বাসার সামনে দিয়ে যাচ্ছি তার খোঁজ না নিয়ে। জয় এখন খোঁজ-খবরের অনেক উর্ধ্বে। সব কিছুতে জয়কে পাশে পেয়ে অভস্ত আমি আজ একা নিজের শরীরটাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। একদিন কেউ থাকবেনা, কিন্তু হঠাৎ দুর্ঘটনায় তোর এভাবে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছিনা আমরা কেউ। আল্লাহ্ আমার হৃদয়বান বন্ধুটিকে বেহেস্ত নসীব করুন। আমীন।
স্টেশন রোড ধরে খুব ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে চোখ মুখ মুছে ধাতস্থ হয়ে নিলাম, ভাগ্যিস পকেটে টিস্যূ ছিল।